চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ১০টি কার্যকারী উপায়

   চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ১০টি কার্যকারী উপায়। চুলের নানাবিদ সমস্যা সমাধানের জন্য কারি পাতা অন্যতম। কারি পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আপনার চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি চুলকে ঘন কালো খুশকি মুক্ত রাখে।

কারি-পাতার-ব্যবহার-১০টি-কার্যকারী-উপায়

আপনারা সকলেই চান ঘন কালো খুশকী মুক্ত চুল তাই না? তাহলে আপনি আজকে থেকে কারি পাতার ব্যবহার শুরু করে দেন। আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, কারি পাতার এত গুণ। তাহলে চলুন কারি পাতার গুনাগুন ও ব্যবহার পদ্ধতি গুলো একটু জেনে আসি।

পেজ সূচিপত্র ঃ কারি পাতার ব্যবহার ১০টি কার্যকারী উপায়

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পাতা। ঘন কালো মজবুত চুল আমরা সকলেই পছন্দ করি, কিন্তু দিনশেষে চুল পড়ে যাওয়া চুলের অকালপক্কতা আমাদের ভীষণভাবে হতাশ করে দেয়। আর এই হতাশার হাত থেকে বাঁচতে আমি নিজেই কারি পাতার ব্যবহার শুরু করি। যখন থেকে কারিপাতা ব্যবহার করি তারপর থেকে আমার চুল অনেক লম্বা হয়েছে এবং ঘন হয়েছে। তাহলে আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করি চুলের যত্নে কারি পাতা কিভাবে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুল আমরা পাবো। তাহলে চলুন জেনে আসি, কারি পাতার ব্যবহার পদ্ধতি সমূহ;

নারিকেল তেল ও কারি পাতা ঃ একটি পাত্রে এক কাপ পরিমাণ নারিকেল তেল দিন, ১০ থেকে ১২ টি কারি পাতা তেলে দিয়ে হালকা আঁচে ৫ থেকে ৭ মিনিট ফুটাতে হবে। ফুটানো হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেকে নিন। এভাবে সংরক্ষণ করে আপনি সপ্তাহের দুই থেকে তিন দিন এই তেল ব্যবহার করুন।

মেথি ,আমলকি ও কারি পাতা ঃ আধা কাপ মেথি, ১০-১২ টি কারি পাতা ও পাঁচ ছয়টা আমলকি একসঙ্গে পেস্ট করে নিন। এবার ভালোভাবে চুলে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট মতো। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।

পেঁয়াজ ও কারি পাতা ঃ চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজ ও কারি পাতা ভীষণ কার্যকারী। পিয়াজ ও কারি পাতা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে ছেকে রসটুকু বের করে তুলার সাহায্যে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট মতো। এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন।

কারি পাতা ও জবা ফুল ঃ প্রয়োজন মতো পানিতে আধা কাপ পরিমাণ কারি পাতা ও পাঁচ থেকে সাতটি জবা ফুল ও জবা ফুলের পাতা একসাথে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

কারি পাতা ও টক দই ঃ কারি পাতা ও টক দই দুটোই চুলের জন্য ভীষণ উপকারী এটা আমরা সবাই জানি। কারি পাতার পেস্ট ও টক দই পরিমাণ মতো নিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে ২০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন।

কারি পাতা ব্যবহারে চুল লম্বা করা যায়

অনেকে জানতে চান কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়, তাই আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব কারি পাতা ব্যবহার করে চুল লম্বা করার পদ্ধতিগুলো। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে ,কারি পাতা চুল লম্বা করতে ও ঘন মসৃণ করতে অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এতে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টি যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, টামিন সি ও এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে পরিমাণ মতো। করে এবং চুল মজবুত ও লম্বা করতে সাহায্য করে।

আমি নিয়মিত সপ্তাহে দুইদিন চুলে কারি পাতা ব্যবহার করে থাকি। এটা দুই ভাবে ব্যবহার করা যায়, একটি হলো কারি পাতার তেল বানিয়ে, দ্বিতীয়টি হলো, কারি পাতার সাথে অন্যান্য উপাদান গুলি মিশিয়ে পেস্ট করে গোসলের পূর্বে চুলে লাগাতে হবে। আধাঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিবেন। আপনার কাছে যদি এই পেস্ট করাটা বিরক্তিকর মনে হয় তাহলে আপনি কারি পাতার তেল বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে আপনি ভালো উপকার পাবেন আশা করা যায়। এছাড়াও চুলের যত্নে মেহেদি পাতাও ভীষণ উপকারী।  

চুলের যত্নে কারি পাতা তেলের ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতা তেলের ব্যবহার কতটা কার্যকারী একটি উপাদান তা ব্যবহার না করলে আপনি বুঝতে পারবেন না। কারি পাতা তেল আপনি নিজেই বাড়িতে বানাতে পারবেন এজন্য আপনাকে বাজারে কিনতে যেতে হবে না অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে না। খোলা নারিকেল তেল কিনে নিবেন, এখন এই তেলের সাথে ১০ থেকে ১২ টি কারি পাতা দিয়ে একটি পাত্রে অল্প আচে ৭ মিনিট মতো ফুটাবেন। ফুটানো হয়ে গেলে তেলের পাত্রটা ঠান্ডা করে একটি কোটাতে তেলটি ছেঁকে সংরক্ষণ করে রাখুন। 

এই তেল আপনি ইচ্ছা করলে প্রতিদিন গোসলের এক ঘন্টা বা ৩০ মিনিট আগে চুলে এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে স্ক্যাল্প করে লাগিয়ে নিন। চাইলে আপনি শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে পারেন আবার শ্যাম্পু না করলেও চলবে। নিয়মিত এই তেলটি ব্যবহার করলে আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হবে সাথে সাথে চুল বৃদ্ধি ও মজবুত হবে।

চুলের উজ্জ্বলতা ফিরাতে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে কারি পাতার ব্যবহার অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। রুক্ষপ্রাণহীন চুলকে সতেজ ও চকচকে করতে কারি পাতা অন্যতম। নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহারে চুল যেমন ঘন কালো হয় তেমন চুল সিল্কি ও উজ্জ্বল হয়। আমার চুলে ও আগে অনেক প্রবলেম ছিল, অনেক কিছুর ট্রাই করে দেখেছি কিন্তু সুফল পায়নি। অবশেষে আমি কারি পাতার উপকার সম্পর্কে জানতে পারলাম, তারপর থেকে আমি নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করি।

এখন আলহামদুলিল্লাহ আমার চুল অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে ও উজ্জ্বল হয়েছে। চুলের উজ্জ্বলতা ফিরাতে সপ্তাহে একদিন কারি পাতার পেস্ট করে পিয়াজ, মেথি, টক দই , জবা ফুল এগুলোর সাথে মিক্স করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনিও রুক্ষ ও ড্যামেজ  চুলের উজ্জ্বলতা ফেরাতে পারবেন।

চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে কারি পাতার ব্যবহার

শীতকাল আসলে বেশিরভাগ মানুষের মাথায় খুশকি ভর্তি হয়ে যায়। এই সমস্যা কম বেশি সকল মানুষের থাকে। খুশকি দূর করতে কারি পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চুলের খুশকি দূর করার জন্য কারি পাতা ব্যবহার  আপনাদের জন্য একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করবে। খুশকি দূর করার জন্য আমরা বাজারের নানা রকম প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি, কিন্তু তাতে তেমন কোন সুফল পাওয়া যায় না। এইজন্য আমার পরামর্শ হলো কমপক্ষে সপ্তাহে একদিন কারি পাতার মিশ্রণ ব্যবহার করে দেখেন, এই পাতার উপকার আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

কিভাবে ব্যবহার করবেন ? কারি পাতার পেস্ট বানিয়ে টক দইয়ের সাথে মিক্স করে চলে আগাগোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে চুলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। আপনি যদি কারি পাতার পেস্ট করা ঝামেলা মনে করেন তাহলে আপনি নারিকেল তেলের সাথে কারি পাতা হালকা আছে পাঁচ থেকে সাত মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে সেই তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারি পাতা শুধু খুঁজকে দূর করে না বরং আপনার চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুল লম্বা করতেও সাহায্য করে।

চুলের যত্নে কারি পাতার হেয়ার প্যাক

চুলের যত্নে কারি পাতার হেয়ার প্যাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক ভীষণ গুরুত্ব পালন করে। আপনি কারি পাতার সাথে যে কোন উপাদান এড করে বিলিন্ডারে পেস্ট করে চুলে লাগাতে পারেন এটি চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। যেমন কারি পাতার সাথে একটি এলোভেরা পেস্ট করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। আবার, কারি পাতা, মেহেদি পাতা, মেথি , পেঁয়াজ , এগুলো দিয়েও পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।

চুলের যত্নে প্রথম উপকারী টিপস হল হেয়ার প্যাক। বাইরের কেনা হেয়ার প্যাক এর চাইতে প্রাকৃতিক উপায়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। সব সময় চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক  উপায়ে চুলের যত্ন নিতে। চুলের যত্নে আরও কিছু টিপস পেতে চান তাহলে ,চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার ও ৭ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। কারি পাতার পাশাপাশি মেথি ও চুলের জন্য ভীষণ উপকারী

কিভাবে কারি পাতা চুলের গুনমান উন্নত করে

চুলের উজ্জলতা বাড়ায় ঃ চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কারি পাতা ভিশন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারি পাতায় রয়েছে প্রয়োজনীয় তেল এবং পুষ্টির উচ্চ মাত্রার ভিটামিন। যা চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

চুল ভেঙ্গে যাওয়া কমায় ঃ নিয়মিত কারি পাতা চুলে ব্যবহার করলে চুল ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। গোড়া থেকে চুল মজবুত করতে সাহায্য করে এই পাতা।

চুলের অকালপক্বতা রোধ করে ঃ চুলের অকালপক্ষতা একটি সমস্যা বর্তমানে। কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন বি যা চুলের প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী একটি উপাদান। এই উপাদান গুলো চুলের অকালপক্ষতা রোধ করতে সাহায্য করে। 

চুলের স্বাস্থ্যের জন্য কারি পাতার উপকারিতা

পুষ্টি সমৃদ্ধ চুলের চিকিৎসা ঃ কারি পাতাকে পুষ্টি সমৃদ্ধ চুলের চিকিৎসা হিসাবে বলা হয়ে থাকে। কেননা এতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যা চুল এবং মাথার ত্বকে পুষ্টি যোগায়, চুলের নানাবিদ সমস্যা সমাধান করে চুলের অকালপক্কতা রোধ করে। নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করলে চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ হয় তাই চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

প্রাকৃতিক চুলের কন্ডিশনার ঃ কারি পাতা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কারি পাতার পেস্ট চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর গোসল করে শ্যাম্পু করে নেন, শ্যাম্পুর পরে আপনাকে আলাদাভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে না। এই কারি পাতায় আপনার চুল সিল্কিও সাইনি করতে সাহায্য করবে।

স্ক্যাল্প পিএইচ ব্যালেন্স করা ঃ মাথার ত্বকের সঠিক পিএইচ বজায় রাখা স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কারন এই পাতা চুলের খুশকি দূর করে এর পাশাপাশি অন্যান্য অবস্থার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।কারি পাতা মাথার ত্বকের ও চুলের স্ক্যাল্প পিএইচ ব্যালান্স করতে ভিশনভাবে সাহায্য করে।

কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম 

কারি পাতা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী একটি পাতা। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কারি পাতা চিবিয়ে খেতে হবে। কারি পাতা শরীরের অনেক উপকার করে থাকে যেমন হজম শক্তি উন্নতি ঘটায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখে, এসিডিটি, উচ্চ রক্তচাপ সহ নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করে থাকে কারি পাতা। কারণ কারি পাতায় রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরে রোগের ঝুঁকি এড়িয়ে  চলতে সাহায্য করে।

যদি আপনি কারি পাতা চিবিয়ে খেতে না পারেন তাহলে তার বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কারিপাতা রান্না করে খেতে পারেন। অন্যান্য সবজি রান্না করার সময় তাতে কারি পাতা এড করে দিন, এতে রান্নার সাত বাড়বে এবং আপনার শরীরের বাড়তি পুষ্টি যোগাবে। এমনকি কারি পাতা শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না এর সাথে চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি করে ও চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে।

কারি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

হজম শক্তি বাড়ায় ঃ কারি পাতা হজমের এন যাইউনকে উজ্জীবিত করে খাবারের কার্যকরী ভাঙ্গনের সাহায্য করে। যারা হজম সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন, তাদের জন্য আমার পরামর্শ হলো নিয়মিত খালি পেটে ৫ থেকে ১০ টি কারি পাতা চিবিয়ে খান। তাহলে দেখবেন কয়েকদিনের ব্যবধানে হজম সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে গেছেন।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াই ঃ কারি পাতায় থাকা ভিটামিন এর চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারি পাতার রাতের অন্ধত্ব এবং ম্যাকুলার অবক্ষয়ের মতো দৃষ্টি সম্পর্কিত সমস্যাগুলির প্রতিরোধ করতে ভীষণ কার্যকারী একটি পাতা।

ত্বকের স্বাস্থ্য বাড়ায় ঃ কারি পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। ত্বকে ব্রণ ,দাগ এবং বলি রেখা কমায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল চকচকে করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ঃ কারি পাতায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি উপাদান রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরকে ভীষণভাবে সংক্রমক ও রোগ প্রতিরোধ করে তোলে।

চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় ঃ প্রোটিন এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ কারি পাতা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ কার্যকারী। চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে এবং চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত করে ,যার ফলে চুল বৃদ্ধি পাই।

কোলেস্টেরল কমায় ঃ কারি পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যার রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আপনার যদি রক্তের কোলেস্টেরল বেশি থাকে তাহলে নিয়মিত খালিপেটে কারিপাতা চিবিয়ে খান।

অ্যান্টি ডায়াবেটিক প্রভাব ঃ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, কারি পাতা রক্তের শর্করার মাত্রাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কার্যকর ভাবে ডায়াবেটিক পরিচালনা করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায় ঃ নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করলে উচ্চ রক্তচাপের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। শুধু চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার করা হয়না, বরং চুলের পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে ঃ কারি পাতা মেটাবলিজম তরান্বিত করে এবং শরীর থেকে টক্সিক উপাদান দূর করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

কারি পাতার অপকারিতা ও সতর্কতা 

  • যদিও কারি পাতা ব্যবহারে অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে এর কিছু অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়। চলুন আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করি কারি পাতা ব্যবহারে অপকারিতা ও সর্তকতা সম্পর্কে।
  • যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কারি পাতার পেস্ট ব্যবহার না করাই ভালো। এতে আপনার এলার্জি বেড়ে যেতে পারে এবং আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন।
  • কারি পাতার বীজ কখনো ভক্ষণ করবেন না, কারণ এই বীজ অনেক বিষাক্ত যা মানুষের ক্ষতি সাধন করে।
কারি-পাতার-ব্যবহার-১০টি-কার্যকারী-উপায়
  • কারি পাতা তেল ব্যবহারে অনেকের মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়। যাদের এই সমস্যা হয় তারা অবশ্যই কারি পাতার তেল এড়িয়ে চলুন।
  • আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে কারি পাতার ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। গর্ভবতীদের জন্য কারি পাতা ক্ষতিকর বলে বিবেচনা করা হয়।
  • আপনার যদি ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কারি পাতা এড়িয়ে চলুন। যাদের অল্পতে ঠান্ডা লেগে যায় তাদের জন্য কারি পাতার ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে।

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে প্রশ্ন

কারি পাতা কি প্রতিদিন ব্যবহার করা যায় ?

কারি পাতা প্রতিদিন ব্যবহার করা যাবে না, সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করা ভালো।

কারি পাতা চুলের যত্নে কিভাবে উপকারী ?

কারি পাতা চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় চুল পড়া কমায় খুশকি দূর করে চুল দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করে। কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং নানা রকম ভিটামিন যা চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

চুল গজানোর জন্য কোন পাতা ভাল ?

চুল গজানোর জন্য অবশ্যই কারিপাতা সবথেকে বেশি কার্যকারী গুরুত্বপূর্ণ পালন করে। নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করলে আপনি ফলাফলটি নিজেই বুঝতে পারবেন।

কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম ?

কারি পাতা সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খেতে হয়।

কারি পাতা সারারাত ভিজিয়ে রাখা যাবে কি ?

কারি পাতা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে তার রক্তে সরকার আর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজম শক্তি উন্নতি করতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় সারারাত কারি পাতা ভিজিয়ে রাখা যাবে।

কারি পাতা চুলের কি কি উপকার করে ?

কারি পাতা বিটা ক্যারোটিন এবং প্রোটিনের সমৃদ্ধ  যা চুলের ফলিক কে শক্তিশালী করে , চুলকে স্বাস্থ্যকর  এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

কারি পাতা খেলে কি উচ্চ রক্তচাপ কমে ?

হ্যাঁ, কারি পাতা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

কারি পাতা খেলে কি কোলেস্টেরল কমে ?

কারি পাতায় এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

চুলের জন্য প্রতিদিন কয়টা কারি পাতা খাওয়া উচিত ?

স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুল পাবার জন্য প্রতিদিন আপনি 5 থেকে ১০ টি কারিপাতা খেতে পারবেন।

সকালের নাস্তার পরে কি কারি পাতা খাওয়া যাবে ?

সকালের নাস্তার পরে কারি পাতা খাওয়া যাবে কিন্তু খালি পেটে কারি পাতা খাওয়া বেশি উপকারী।

শেষ কথা ঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ১০টি কার্যকারী উপায়

একটা কথা আপনাদের বলতে পারি সেটা হলো কারি পাতা ব্যবহারের ফলে চুল সত্যি অনেক সুন্দর ও মসৃণ হয়। চুল পড়া কমায় এবং চুলের স্বাস্থ্যজ্জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। যারা অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা নিয়ে ভুগে থাকেন তারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে কারি পাতা ব্যবহার নিয়ম পদ্ধতি কারি পাতার উপকারিতা এসব তথ্যগুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই আপনি উপকার পাবেন।

প্রিয় পাঠক আশা করি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন, এবং আপনি এতক্ষনে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার কিভাবে করতে হয়। আশা করি এই পদ্ধতিগুলি আপনি অনুসরণ করবেন। এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল করার জন্য নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুন্নি ফিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url