গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে

  গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে। গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক খাদ্যাভ্যাস এর অভাবে আমাদের দেশে অনেক অপুষ্টিকর বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে। এ সময় একজন গর্ভবতী মাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চার-ওজন-বৃদ্ধি-পাবে

আমার আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে, গর্ভাবস্থায় একজন মাকে কোন কোন ভিটামিনের প্রয়োজন। কোন খাবার খেলে বাচ্চা পরিপূর্ণ পুষ্টি পাবে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। বিস্তারিত জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্র ঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে

গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন কত হওয়া উচিত

গর্ভাবস্থায় মা ও সন্তানের সুস্থতার জন্য অবশ্যই একজন মায়ের ওজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মায়ের ওজন ঠিক না থাকলে পেটের বাচ্চাও পুষ্টিকর ও সুস্থ স্বাভাবিক হবে না এটাই স্বাভাবিক।  একজন মা যদি গর্ভাবস্থায় সঠিক ওজন নিয়ে বাচ্চা প্রসব করে তাহলে সেই বাচ্চা স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর হয়। গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন বৃদ্ধির মাধ্যমে গর্ভের শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় এবং গর্ভকালীন সময় যাবতীয় জটিলতা কমে যায়।

তাই একজন গর্ভবতী মাকে অবশ্যই গর্ভকালীন সময়ে সঠিক ওজন রাখা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন বৃদ্ধি করা উচিত। যাদের গর্ভকালীন সময়ে ওজন তেমন একটা বাড়ে না তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুন ঃ বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়

স্বাভাবিকভাবে গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধির নির্ধারিত কিছু গাইড লাইন রয়েছে। আপনি চাইলে সেই গাইডলাইন গুলো অনুসরণ করে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার আদর্শ BMI হলো ১৮.৫ থেকে ২৪.৯। আর যে সকল মহিলাদের BMI কম হয় সে সকল মায়েদের ওজন ১৮ কেজি বাড়লেও তেমন কোন সমস্যা হয় না। এই ওজন বাচ্চা প্রসবের পর স্বাভাবিকভাবে কমে যায়।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন খাবার প্রয়োজন

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির জন্য কি কি খাবার প্রয়োজন, কি খেলে বাচ্চার ওজন ঠিক থাকবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। স্ক্রিপ্ট না করে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

প্রেগনেন্সির শেষের তিন মাসে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পায়। এই সময়টাতে একজন গর্ভবতী মাকে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। নিচে একজন গর্ভবতী মায়ের পুষ্টিকর খাবারের তালিকা দেওয়া হলো ;

আয়রন যুক্ত খাবার ঃ বাচ্চা জন্মের পূর্বে শেষের তিন মাসে গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এ সময় একজন গর্ভবতী মাকে অবশ্যই বেশি বেশি আইরন যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন বাদাম, কলা, ডাবের পানি, পালং শাক, মটরশুটি ,মসুর ডাল, সবুজ শাকসবজি, ফলমূল , কলিজা ,কলার মোচা, ডোমোর ইত্যাদি এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য জরুরি।

ভিটামিন যুক্ত খাবার ঃ গর্ভকালীন সময় মায়েদের প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিনের চাহিদা বেড়ে যায়। ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন; ডিমের কুসুম, গরু ও খাসির কলিজা , কমলা ,মালটা , লেবু ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি রাখতে হবে। কারো যদি ভিটামিনের অভাব বেশি দেখা দেয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা তৈরি করতে হবে।

দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার ঃ গর্ভবতী মাকে অবশ্যই দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। দুগ্ধজাত খাবার শিশুর হাড় গঠনে সহায়তা করে পাশাপাশি ওজন ও উচ্চতা ও শারীরিক গঠনে সাহায্য করে। তাই শিশুর অর্জুন বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই খাদ্য তালিকায় দুধ রাখা উচিত।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ঃ গর্ভাবস্থায় শিশুর সঠিক ওজন বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে শিশুর পেশি ও টিস্যু গঠনে ভীষণভাবে সাহায্য করে। প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন; মুরগির মাংস, মাছ, ডিম, বাদাম, গাজর, মটরশুটি, কিসমিস, খেজুর ইত্যাদি। গর্ভাবস্থায় এই খাবারগুলি নিয়মিত খাবেন।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড ঃ ওমেগা ৩ টি অ্যাসিড এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশের পাশাপাশি শিশুর সার্বিক উন্নতিতে সহায়তা করে। এইজন্য যেসব মাছের তেল আছে সেইসব মাছ খেতে হবে বেশি বেশি। এছাড়াও বীজ জাতীয় খাবার খেতে হবে যেমন চিয়াবীজ , আখরোট, কুমড়োর বীজ ইত্যাদি খেতে পারেন নিয়মিত।

সবুজ শাকসবজি ঃ সবুজ শাকসবজিতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন মিনারেল ও আঁশ থাকে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় নিয়মিত শাকসবজি থাকতেই হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খেতে পারেন। এ সময় ভিটামিনযুক্ত খাবার মা ও গর্ভের শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাইলে আপনি সবুজ সবজি দিয়ে স্যুপ বানিয়েও খেতে পারবেন। সব স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।

গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চার-ওজন-বৃদ্ধি-পাবে

ফলমূল ঃ গর্ভকালীন সময় ফলের বিকল্প কিছু নেই। যেসব ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে সেসব ফল খেতে হবে নিয়মিত। যেমন ; মালটা, কমলা, আম ,তরমুজ ,কলা ইত্যাদি ফলগুলো নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখবেন। ভিটামিন সি জাতীয় ফল মা ও শিশু উভয়ের জন্য ভীষণ স্বাস্থ্যকর। এছাড়াও এইসব ফল দিয়ে আপনি ফালুদা বানিয়ে খেতে পারেন।

পর্যাপ্ত পরিমান পানি ঃ অন্তঃসত্ত্বা মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। পানির বিকল্প কিছু নেই। মা ও শিশু উভয়ের ভালো থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ বাচ্চা পেতে চাইলে দিনে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ঃ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই যেসব খাবারে কোষ্ঠকাঠির নজর করতে সাহায্য করে সেসব খাবার নিয়মিত খেতে হবে যেমন ; বাদামি চাল, মটরশুটি, শাকসবজি, নারিকেল, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে। তাই অবশ্যই এই খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

গর্ভাবস্থায় কোন কোন ভিটামিন ও খনিজ প্রয়োজন

গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই ভিটামিন ও খনিজ যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। মা ও শিশু উভয়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ও খনিজ যুক্ত খাবার গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে জেনে নিই কোন কোন খাবারে কোন কোন ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে।

ভিটামিন সি ঃ গর্ভের সন্তানের মাড়ি ও হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন গর্ভবতী মা কে ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার হল যেমন লেবু, কমলা, জাম্বুরা, ব্রকলি, টমেটো, স্ট্রবেরি এগুলোতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে।

ভিটামিন ডি ঃ ভিটামিন ডি আপনার শিশুর হার ও ভালো দৃষ্টি শক্তি বিকাশের সহায়তা করে । ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন তেল জাতীয় মাছ, ফোরটিফাইড মিল্ক ইত্যাদি খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট সূর্যের তাপ গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন বি ৬ ঃ ভিটামিন বি ৬ আপনার শিশুর লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। কমপক্ষে প্রতিদিন আপনাকে 1.9 মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ৬ গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন বি ৬ রয়েছে যেসব খাবারে যেমন ; গরুর মাংস, পাকা কলা ইত্যাদি হল ভিটামিন বি ৬ এর ভালো উৎস।

আরো পড়ুন ঃ হাঁসের ডিম না মুরগি কোন ডিমে পুষ্টি বেশি

আয়োডিনযুক্ত খাবার ঃ সুস্থ স্বাভাবিক বাচ্চা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আয়োডিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। আপনার প্রতিদিন ২২০ মাইক্রগ্রাম আয়োডিন প্রয়োজন। আয়োডিনযুক্ত খাবার যেমন ডেইরি পণ্য , সামুদ্রিক খাবার, মাংস, মাছ ও ডিম।

ফলিক এসিড ঃ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফলিক এসিড ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভিটামিন বি গর্ভের শিশুর  ওজন  বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশে সাহায্য করে।

ক্যালসিয়াম ঃ গর্ভের শিশুর হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে। যেসব খাবারে ক্যালসিয়াম বেশি থাকে যেমন; দই, দুধ , পনির, পাতাযুক্ত গারো সবজি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত

গর্ভবতী মায়েদের নির্দিষ্ট কিছু খাবার থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি গর্ভপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। এইজন্য গর্ভকালীন সময় কিছু খাবার আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে। কি কি সেই খাবার চলুন তাহলে একটু জেনেনি।

  • মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার। মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবারে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যার ফলে আপনার পেটের সমস্যা হতে পারে। বাইরের কোন জিনিস খাবার আগে অবশ্যই মেয়াদ আছে কিনা দেখে নিবেন।
  • অতিমাত্রায় চা ,কফি পান করা থেকে দূরে থাকবেন , কারণ এটি গর্ভপাত ও বাচ্চার ওজন কমিয়ে দিতে পারে।
  • অপরিষ্কার ফলমূল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। না ধুয়ে কোন ফল বা কাঁচা সবজি খাবেন না, এটি পরজীবী সংক্রমণ যা গর্ভাবস্থায় ক্ষতি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিনি এবং জাঙ্কফোর্ড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে আপনার ওজন বাড়িয়ে দিবে এবং গর্ভকালীন শিশুর ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
  • কাঁচা মাছ ও সীফুড এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী। গর্ভকালীন সময়ে আপনার ক্ষতি সাধন করতে সাহায্য করবে।
  • কাঁচা বা পরিপূর্ণ রান্না না হওয়া মাংস খাবেন না। কেননা এগুলোতে রয়েছে টোকসোপ্লাজমা গণ্ডির মতো পরজীবী এবং স্যালমনিয়া ও লিস্টে্রিয়ার  মত ব্যাকটেরিয়া।
  • অ্যালকোহল, তামাক এবং ধূমপান গর্ভাবস্থায় এগুলো থেকে দূরে থাকবেন। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে গর্ভের সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় প্রথম ট্রাইমেষ্টারে যে খাবারগুলি খেতে নিষেধ করা হয়

গর্ভকালীন সময়ের প্রথম তিন থেকে চার মাস গর্ভবতী মহিলাদের কিছু খাবার খেতে নিষেধ করা হয়। কারণ এই খাবারগুলি গর্ভপাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। নিচে সে খাবারগুলি তালিকা দেওয়া হলো।

  • কাঁচা ডিম, মেয়োনিজ
  • আধা সিদ্ধ খাবার
  • কাঁচা পেঁপে, আনারস
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার
  • অ্যালকোহল
  • জাঙ্ক ফুড
  • সি ফুড

উপরে উল্লেখিত খাবার গুলি প্রথম ৩ থেকে ৪ মাস না খাওয়াই উচিত। এইসব খাবারে গর্ভপাতের সম্ভাবনা রয়েছে যার কারণে ডাক্তাররাও পরামর্শ দেয় এইসব খাবার প্রথম কয়েক মাস না খাওয়ার জন্য।

গর্ভবতী মায়ের জন্য সচেতনতার সাথে খাবার প্রস্তুত করা

অবশ্যই বাসার লোকদের খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী মায়ের জন্য সচেতনতার সাথে খাবার প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে। বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সচেতনতার সাথে খাবার প্রস্তুত করাও খুব জরুরী। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে অবশ্যই সুস্থ স্বাস্থ্যবান বাচ্চা আশা করা যায় না। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য কিভাবে খাবার প্রস্তুত করতে হয় নিচে আপনাদের সুবিধার্থে উল্লেখ করা হলো।

  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় খাবার তৈরি করা।
  • খাবার পরিবেশন এর আগে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
  • খাবারের পর পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখা।
  • মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে  রান্না করতে হবে।
  • রান্না না করা শাকসবজি, সালাদ, ফলমূল ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে খেতে হবে।
  • রান্নার পর গরম গরম খাবার খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কতটা বেশি খাওয়া দরকার

গর্ভাবস্থায় শুধু যে খাবারের উপর নির্ভর করে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পায় সেটা কিন্তু নয়। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে কখনোই বাচ্চা স্বাস্থ্যবান হয় না। তবে হ্যাঁ পুষ্টিকর প্রোটিন যুক্ত খাবার অবশ্যই খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার না খেলে বাচ্চা সুস্থ স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যবান হবে না। গর্ভবতী মাকে কিছুক্ষণ পর পর খাবার গ্রহণ করা উচিত একসাথে বেশি খাবার খাওয়া ক্ষতিকর।

গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চার-ওজন-বৃদ্ধি-পাবে

গর্ভকালীন সময়ে প্রথম তিন মাস আপনাকে বাড়তি কোন খাবারের প্রয়োজন নেই। চার মাস থেকে প্রতিদিন আপনাকে ৩৪০ ক্যালোরি বাড়তি দরকার হবে। আর শেষ তিন মাসে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৪৫০ ক্যালোরি দরকার হবে। শেষ তিন মাস বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পায়, যেমন খাবার খাবেন বাচ্চা ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর হবে।

আরো পড়ুন ঃ ব্রয়লার মুরগির পুষ্টিগুণ ও ৮টি ক্ষতিকারক দিক

শেষের তিন মাসে মায়ের ও শক্তির প্রয়োজন পড়ে এজন্য কিছুক্ষণ পর পর প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। চাইলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়ামের ওষুধ খেতে পারেন।

শেষ কথা ঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে এই সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি সঠিক তথ্যটি তুলে ধরার। আপনি যদি আর্টিকেলটি সম্পন্ন করে থাকেন তাহলে এতক্ষণ নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কোন কোন খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে। আমার বলে দেওয়া স্টেপ গুলি অনুসরণ করলে আশা করি আপনি উপকৃত হবেন। আরো ভালো করে জানতে আপনার নিকটবর্তী ভাল কোন গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

প্রিয় পাঠক , আমার আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুন্নি ফিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url