ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি

  ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাংক। যারা ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাই কিন্তু কিভাবে লোন নিতে পারবেন সেই তথ্য জানা নাই তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি ।

ইসলামী-ব্যাংক-বাংলাদেশ-লিমিটেড-লোন-পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে লোন নেবার পদ্ধতি এবং ব্যাংক লোন নিতে কি কি নিয়ম কানুন মানতে হবে কি কি কাগজপত্র লাগবে কোন পদ্ধতিতে লোন পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

পেজ সূচিপত্র ঃ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংকের ভাষায় লোন পদ্ধতিকে সাধারণত "ইনভেস্টমেন্ট" বলা হয়ে থাকে। আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে চান তাহলে, প্রথমে আপনাকে লোন নেবার খাত বা প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে। অতঃপর আপনার নিকটস্থ "ইসলামী ব্যাংক" শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের লোন কে ইনভেস্টমেন্ট বলা হয় কারণ তাদের লোন দেবার পদ্ধতি বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। ইসলামিক ব্যাংকগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠানের জন্য টাকা প্রদান করা, যাতে করে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে আপনাকে কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং ব্যাংকের নীতিমালা মানতে হবে। সাধারণত, ইসলামী ব্যাংক গুলি আপনার আয় বা ইনকাম সোর্স এর উপর ভিত্তি করে আপনাকে লোন প্রদান করবে।

আরো পড়ুন ঃডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন করার নিয়ম 

যোগ্যতা অর্জন ঃ ইসলামী ব্যাংক আপনাকে লোন প্রদান করার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা এবং শর্ত পূরণের জন্য অপেক্ষা করবে। এতে আপনার আয়ের সঠিক প্রমাণ পত্র, ব্যবসার পরিকল্পনা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

ব্যাংকের নীতিমালা ঃ ইসলামিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কিছু নীতিমালা থাকে যেগুলো মেনে চলতে হবে। এতে লোন প্রদানের খাত নির্বাচন , প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং ব্যাংকের নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরী।

আয় ভিত্তিক লোন ঃ আপনার ইনকাম বা আয় এর উপর নির্ধারণ করে ব্যাংক কতটুকু ইনভেস্টমেন্ট প্রদান করবে। এর মাধ্যমে ব্যাংক আপনার লোনের সক্ষমতা মূল্যায়ন করবে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক থেকে ইনভেস্টমেন্ট তথা লোন নেবার জন্য কিছু নিয়ম বা পদ্ধতি রয়েছে। যেমন;

  • আপনার চাহিদা অনুযায়ী লোনের ধরন নির্বাচন করুন।
  • এরপর আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় গিয়ে সাক্ষাৎ করুন।
  • তারপরে ব্যাংক ব্রাঞ্চে উপস্থিত হয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে লোন সম্পর্কে আলোচনা করুন। 
  • ব্যাংক ম্যানেজার আপনাকে পরবর্তী ধাপগুলোর বিষয়ে জানিয়ে দিবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামী ব্যাংকগুলোতে যে সমস্ত লোন সার্ভিস রয়েছে সেগুলো সাধারণত লোন হিসেবে পরিচিত নয়। ইসলামী ব্যাংকগুলোর ভাষায় এটি "ইনভেস্টমেন্ট" হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক থেকে ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে কি পরিমান লাভ্যাংশ প্রদান করতে হবে, এবং কিভাবে প্রফিট শেয়ারিং করতে হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দিবে।

তাছাড়াও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে আপনাকে জানিয়ে দিবে যে, অতিরিক্ত কোন ফি বা চার্জ লাগবে কিনা, এবং ইন্টারেস্টের পরিমাণ (যা শুধুমাত্র মুনাফাহ হিসাবে গণ্য হয়) কত হবে।

এভাবে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে আপনি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে  সহায়তা লাভ করবেন।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সময় আপনার একটি  ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। অ্যাকাউন্ট না থাকলে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিবেন। কেননা লোনের টাকা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

ইসলামী ব্যাংকের ঋণের তালিকা

ইসলামী ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ধরনের ইনভেস্টমেন্ট দেওয়া হয়। আপনার ব্যবসার  ওপর নির্ভর করে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। ব্যাংক থেকে যেসব খাতের উপর লোন নেওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে -

  1. ইসলামী ব্যাংক হোম লোন 
  2. ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন
  3. ইসলামী ব্যাংক বানিজ্য লোন
  4. ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন
  5. ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন
  6. ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন
  7. ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে উপরে উল্লেখিত উক্ত খাতগুলো থেকে লোন নিতে পারবেন। বাড়ি বানাতে কিংবা হোম লোন, রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে চাইলে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এছাড়াও কৃষি কাজের জন্য কৃষি লোন নিতে পারেন, বাণিজ্য করতে চাইলে বাণিজ্য লোন, এমনকি আপনি যদি উদ্যোক্তা হতে চান তবে উদ্যোক্তা লোন নিতে পারবেন।

তাহলে চলুন এই লোনগুলো নিতে কি কি ধাপ পার করতে হবে, এবং কিভাবে এই লোনগুলো আপনি সহজে পাবেন তা একটু বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করি।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন 

ইসলামী ব্যাংক  থেকে হোম লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ি নির্মাণের জন্য তারা আপনাকে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা এবং সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনভেস্টমেন্ট প্রদান করবে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি যদি বাড়ি তৈরির জন্য লোন নিয়ে তাহলে ব্যাংক মূলত প্রয়োজনীয় সকল নির্মাণ সামগ্রী যেমন রোড, সিমেন্ট, বালি ইত্যাদি নিজেই সরবরাহ করবে।

ব্যাংক থেকে এসব সামগ্রী সরবরাহ করে আপনাকে কেনাকাটা করতে বলে না, কারণ তারা এই লোনকে ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করে। এর মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হয় যে, নির্মাণসামগ্রী গুলো যথাযথভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং প্রকল্পের গুণগত মান বজায় রাখছে।

আরো পড়ুন ঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন  নিয়ম ২০২৫

এভাবে ইসলামী ব্যাংক আপনাকে বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।যা সুদের ভিত্তিতে নয়,বরং ইনভেস্টমেন্ট এর ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণের জন্য অবশ্যই আপনাকে দুইজন ব্যক্তি গ্যারান্টার থাকতে হবেন, এবং লোন দেবার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস  প্রয়োজন হবে যেমন;

  • জমির দলিল এবং খতিয়ান নম্বর
  • এন ই সি।
  • গ্যারান্টার এর কিছু ডকুমেন্টস।
  • খতিয়ান নামধারী রশিদ।
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট।

ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন

বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। এদেশের কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এ দেশ কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। এজন্য অবশ্যই কৃষকদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষকরা তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত কৃষি পণ্যগুলো বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এই বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং কৃষি খাতের উন্নয়নে সহায়তা করে। কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকদের স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ থেকে কৃষকদেরও লোন প্রদান করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক থেকে কৃষি লোন পাবার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ;

  • জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • কৃষি জমির দলিল।
  • বর্তমান আয়ের উৎস  সংক্রান্ত ডকুমেন্টস।
  • কৃষি ট্রেনিং গ্রহণ করা থাকলে উত্তর ট্রেনিংয়ের ডকুমেন্ট।

ইসলামী ব্যাংক বানিজ্য লোন

প্রতিটি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাংলাদেশ ও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। বাংলাদেশের ব্যবসা খাতকে আরো উন্নত করতে এবং ব্যবসায়ীদের কাজের সহায়তা করতে ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন প্রদান করে থাকে।

খুব সহজ শর্ত , এবং অল্প কিছু রকমের জমা দেওয়ার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর পক্ষ থেকে বাণিজ্য লোন প্রদান করে থাকে। ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য ইনভেস্টমেন্ট এর জন্য কিছু প্রয়োজনীয় রকমের নিয়ে থাকে। যেমন;

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি।
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দলিল।
  • গ্যারান্টার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস।
ইসলামী-ব্যাংক-বাংলাদেশ-লিমিটেড-লোন-পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ইনভেস্টমেন্ট প্রদান করে থাকে আরও একটি মাধ্যমে সেটা হল উদ্যোক্তা লোন। চাকরির উপর নির্ভরশীল না হয়ে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের লোন প্রদান করে থাকে ইসলামী ব্যাংক। ব্যবসার খাতকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে উদ্যোক্তা লোন গ্রহণের জন্য আপনার কাছ থেকে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস চাইবে। যেমন;

  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট।
  • বাড়ির ঠিকানা
  • ব্যবসার পরিকল্পনা, আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য , কি নিয়ে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ব্যবসার লাইসেন্স।
  • শ্রমিকদের তালিকা।
  • আয়কর রিটার্ন।
  • ব্যবসার প্রস্তাবনা।

উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলোর প্রস্তুত রাখতে হবে। যাতে করে ইসলামী ব্যাংক থেকে উদ্যোক্তা লোন গ্রহণ করার সময় আপনি উক্ত ডকুমেন্টগুলো প্রদান করতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন

বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণদের জন্য আয়ের অন্যতম উৎস হল ফ্রিল্যান্সিং। বাংলাদেশে তরুণরা প্রতিমাসে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ রেমিটেন্স আর্ন করে। যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তরুণদের সুবিধার্থে এবং ফ্রিল্যান্সিং এর আগ্রহ বৃদ্ধিতে ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন প্রদান করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং লোন গ্রহণ করে আপনিও ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। তবে এই লোনটি দুই বছরের মধ্যে আপনাকে পরিশোধ করে দিতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং লোন গ্রহণের জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রেডি রাখতে হবে। যেমন;

  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট।
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র।
  • আয়কর রিটার্ন।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট। আপনার ব্যাংক হিসাবের সর্বশেষ বিবরণী।
  • ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং এর প্রমাণ পত্র।
  • পেশাগত পরিকল্পনা। 
  • ডকুমেন্ট এবং ইনভয়েস। যে সকল গেজেট বা সরঞ্জাম ক্রয় করবেন তার প্রাথমিক খরচের বিবরণ।

মূলত এই ডকুমেন্টসগুলো প্রস্তুত থাকলে আপনি খুব সহজে ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য লোন গ্রহণ করতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন

বর্তমানে বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনিও যদি চান রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করতে তাহলে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন।

স্টেট ব্যবস্থা হল এমন একটি ব্যবসা যা সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় এবং উন্নয়নের সাথে যুক্ত। এই খাতের মধ্যে বাসস্থান বাণিজ্যিক স্থান ও আবাসিক প্রকল্পের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে প্রথমে বাজার গবেষণা, প্রকল্প পরিকল্পনা এবং অর্থায়নের বিষয়ে বেসিক কিছু জ্ঞান থাকা লাগবে।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসার খাত প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট বা লোন প্রদান করে থাকে। এর জন্য আপনার কাছ থেকে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিবে। যেমন;

  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট।
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র।
  • আয়কর রিটার্ন।
  • ব্যবসার পরিকল্পনা।
  • সম্পত্তির কাগজপত্র।
  • নির্ধারিত খরচের রশিদ।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

মূলত এই ডকুমেন্টসগুলোর প্রস্তুত থাকলে আপনি খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য লোন গ্রহণ করতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন

বর্তমান বাংলাদেশে উদ্যোক্তা তৈরিতে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প খাতে উন্নয়নের জন্য ইসলামী ব্যাংক এস এম ই লোন প্রদান করে। একটি দেশের শিল্পের মান অনুযায়ী ওই দেশের উন্নয়ন সাধিত হয়। চাইলে আপনিও একজন উদ্যোক্তা হয়ে শিল্প খাতের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারেন।

এই জন্য আপনাকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে লোন প্রদান করবে। শিল্প খাত উন্নয়ন লোন গ্রহণের জন্য আপনার কাছে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চাইবে। যেমন;

  • জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট।
  • ব্যবসার জায়গার দলিল প্রয়োজন হতে পারে।
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স।

ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত

সরকারি বা বেসরকারি চাকুরীজীবী বা ব্যবসায়ী, কৃষক বা উদ্যোক্তা সব ধরনের মানুষ ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি সরকারি চাকরিজীবী হন তাহলে অবশ্যই আপনার এক বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে, তাহলে আপনি লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য যাদের বেতন একাউন্টে জমা হয়, তাদের সর্বশেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।

ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকদের জন্য লোন নেওয়ার শর্ত হলো আপনাকে একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন এক বছর একটানা কর্মরত থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৬ মাস এক প্রতিষ্ঠানে এবং পরের ৬ মাস অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। এক বছর এক প্রতিষ্ঠানে থাকতে হবে, তাহলে আপনি লোন পাবেন।

অপরপক্ষে ব্যবসায়ীদের জন্য, ব্যবসার বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। যদি আপনার ব্যবসায় এক বছর পূর্ণ হয় তাহলে আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে লোন পাওয়ার শর্ত হলো, লোন গ্রহণের জন্য সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে দুইজন গ্যারান্টার রাখতে হবে। গ্যারান্টার হিসেবে আপনি আপনার বাবা-মা, ভাই বোন, আত্মীয়-স্বজন অথবা কাছের কোন মানুষকে রাখতে পারেন। তবে গ্যারান্টারের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল হতে হবে, কেননা তাদের আর্থিক সক্ষমতা লোনের নিশ্চয়তা করণে ভূমিকা রাখে।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ঃ

 হোম লোনের জন্য ঃ

  • আপনার নিজস্ব ব্যক্তিগত মালিকানার একটি জমি থাকতে হবে। যদি আপনার পিতার নামেও জমি হয় তাও চলবে।
  • জমির মূল দলিলটি জমা দিতে হবে। দলিলের কপি গ্রহণযোগ্য নয়।

সরকারি প্লটের ক্ষেত্রে ঃ

  • প্লটের বরাদ্দপত্র এবং দখল হস্তান্তর পত্র।
  • লিজদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে বন্ধক অনুমতি পত্র।
  • মূল লিজ দলিল এবং বায়া দলিল (যদি প্রয়োজন হয়)।
  • হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মালিক হলে, হস্তান্তর অনুমতিপত্র, নামজারী এবং খাজনা রশিদ।

প্রাইভেট প্লটের ক্ষেত্রে ঃ

  • জমির মূল মালিকানা দলিল এবং বায়া দলিল।
  • সিএস,এসএ,আরেস,ও বিএস খতিয়ানের জাবেদা নকল।
  • জেলা বা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ইস্যুকৃত ১২ বছরের নির্দিষ্ট সনদ।
ইসলামী-ব্যাংক-বাংলাদেশ-লিমিটেড-লোন-পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংকের লোনের মুনাফা ঃ

  • সাধারণত ইসলামী ব্যাংক লোনের ক্ষেত্রে ১৬% মুনাফা নিয়ে থাকে। তবে লোনের ধরন ও মেয়াদ এবং পরিমাণ অনুসারে কিছুটা কম বেশি হতে পারে। 
  • এসব তথ্য জানি আপনি সহজে আপনার প্রয়োজনীয় লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের কিছু সাধারন ঋণের মুনাফার হার

গ্রাহক ঋণ ঃ ৯% থেকে ১৫%

হাউজিং ঋণ ঃ ১১% থেকে ১৭ %

SME ঋণ ঃ ১০% থেকে ১৬% 

কৃষি ঋণ ঃ ৯% থেকে ১৪%

অটো ঋণ ঃ ১২% থেকে ১৮%

শেষ কথা ঃ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক লোন প্রদানের ক্ষেত্রে শরীয় ভিত্তিক নিয়ম কানুন মেনে লোন প্রদান করে থাকে। তাই অবশ্যই যারা লোন নিতে চান তাদের অবশ্যই ব্যাংকের নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। চাইলে আপনিও যে কোন ব্যবসার জন্য লোন নিতে পারেন।

প্রিয় পাঠক, আপনিও ইসলামী ব্যাংক থেকে খুব সহজে কিছু ডকুমেন্টস জমা দিয়ে লোন নিতে পারেন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি সম্পন্ন করেছেন, তাহলে অবশ্যই আপনি এতক্ষণে জেনে গেছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি সমূহ। এমন আরো তথ্যপূর্ণ পোস্ট করার জন্য নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।



 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুন্নি ফিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url