টমেটোর পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা। সারা বিশ্বের কাছে টমেটো
একটি জনপ্রিয় সবজি। টমেটো বিভিন্ন পুষ্টিতে ভরপুর একটি সবজি। টমেটো পছন্দ করে না
এমন মানুষ নাই বললেই চলে। টমেটো অনেক ভাবে খাওয়া যায়, যেমন; রান্না
করে, সালাত হিসাবে, কাঁচা চিবিয়ে ইত্যাদি ভাবে টমেটো খাওয়া যায়।
আজকে আমার আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো টমেটোর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও
১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। অনেকেই হয়তো জানে না টমেটোর পুষ্টিগুণ ও
স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই। টমেটোর
গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র ঃ টমেটোর পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
টমেটো হলো তরতাজা রসালো মিষ্টি এবং সামান্য টক জাতীয় একটি সবজি। শীতকালীন এসব্জি
এখন প্রায় ১২ মাস পাওয়া যায়। তবে শীতকালে এর আমদানি বেশি। টমেটোতে রয়েছে
ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। টমেটো এমন একটি সবজি
যা বিভিন্ন তরকারির সাথে রান্না করা যায়। শুধু তাই নয়, সালাত হিসাবে ও টমেটো
ভীষণ জনপ্রিয়। একটি বড় টমেটোতে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে আজকে আমরা
সেই সম্পর্কে জানবো।
পুষ্টি উপাদান
পরিমান
পানি
৯৫%
শক্তি
৩২.৮ কিলো ক্যালরি
প্রোটিন
১.৬ গ্রাম
চর্বি
০.৩৬৫
ফাইবার
২.১৮ গ্রাম
চিনি
৪.৭৮ গ্রাম
পটাসিয়াম
৪৩১ মিলিগ্রাম
গ্লুকোজ
২.২৮ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম
২০ মিলিগ্রাম
আয়রন
০.৪৯১ মিলিগ্রাম
ফসফরাস
৪৩.৭ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম
১৮.২ মিলিগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট
৭.০৮ গ্রাম
দস্তা
০.৩০৮ মিলিগ্রাম
তামা
০.১০৬ গ্রাম
সোডিয়াম
৯.২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ
৪২ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন কে
৭.৮ মাইক্রোগ্রাম
টমেটোর ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
টমেটো একটি স্বাস্থ্যসম্মত সবজি। টমেটো অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় টমেটো রাখলে রক্তের ট্রাইগ্লিসারইডের মাত্রা হ্রাস
পায়। নিয়মিত টমেটো খেলে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয় পাশাপাশি রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী
টমেটো। আজকে আমরা টমেটোর দশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
টমেটো অদ্রব্যনীয় ফাইবারে পূর্ণ, যা মলকে নরম করে। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিনের
সমস্যা থেকে থাকে তবে এটি বিশেষভাবে উপকার করতে সাহায্য করবে। এতে
দ্রব্যনীয় ফাইবার থাকাই খাদ্য তালিকায় টমেটো অন্তর্ভুক্ত করলে এটি রক্তের
গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি কার্বোহাইড্রেট এর হজম এবং শোষণকে ধীর করে
দেয়, তাই রক্তে শর্করার মাত্রা খুব দ্রুত বাড়ে না এবং খাওয়ার পরে বেশি
সময় ধরে পেট ভরা অনুভূত হয় না।
দ্রব্যনীয় ফাইবার আমাদের অন্তরে একটি প্রিবায়োটিক হিসাবেও কাজ করে।
প্রিবায়োটিক হল এমন খাবার যা আমাদের স্বাস্থ্যকর অন্তের ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট
করে। সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ২৫ গ্রাম এবং
পুরুষদের ৪০ গ্রাম ফাইবার রাখা উচিত। একটি মাঝারি সাইডে টমেটোতে ১.৫ গ্রাম
ফাইবার সরবরাহ করে, যা অদ্রব্য নিয়েও এবং দ্রব্যনীয় ফাইবার দ্বারা গঠিত। এর
দুটোই হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এবং ভীষণভাবে সহায়ক।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
টমেটো আমাদের পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করে স্বাস্থ্যকর রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণেও ভীষণভাবে সাহায্য করে। রক্তে পটাশিয়ামের উপস্থিতি কিডনির রক্ত
প্রবাহে সোডিয়ামে মাত্রা কমিয়ে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপে ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই খাবারের তালিকায় নিয়মিত টমেটো
রাখুন। টমেটো আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, এবং শরীরের পুষ্টি যোগায়। তাহলে
নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন টমেটো উপকারি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য।
রক্ত ও হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে
একটি মাঝারি সাইজের টমেটোতে ভিটামিন কে এর দৈনিক চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ থাকে।
ভিটামিন কে প্রোটিন গঠন এবং সক্রিয় করতে ভূমিকা রাখে যার রক্ত জমাট বাঁধতে এবং
হাড়কের শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে রক্তে বেশি লাইকোপিন থাকলে হৃদরোগ এবং
ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এইসব বড় বড় রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই
টমেটো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। স্বাস্থ্য সচেতনতা দিক থেকে টমেটো ভীষণ উপকারী
একটি সবজি।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন উপাদান হার্টের বেশ কিছু জটিলতাও কমাতে পারে। বেশ যাদের
রক্তে লাইকোপিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কম দেখা গেছে।
৪০ বছর পার হওয়ার পর মানুষের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। মধ্যবয়সী
মানুষদের জন্য টমেটো খাওয়া ভীষণ উপকারি।
অন্য এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যাদের রক্তে সবচেয়ে কম পরিমাণে লাইকোপিন রয়েছে
তাদের তুলনায় যাদের রক্তে বেশি পরিমাণে লাইকোপিন আছে তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি
৫৫ শতাংশ কম।
ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে
টমেটোতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি ত্বকে ইউ ভি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। টমেটো ত্বকের বার্ধক্যের প্রভাব কমায় এবং
উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।টমেটোতে বিদ্যমান লাইকোপিন সূর্যের ক্ষতিকারক
রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।
এটি কোলাজেন ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধে এবং আমাদের ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন
বাড়াতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ও বয়সের ছাপ কমাতে
নিয়মিত টমেটো খান। শুধু তাই নয়, রূপচর্চার জন্য টমেটো ব্যবহার করা হয়।
চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
টমেটোতে থাকা আরেকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো বিটা ক্যারোটিন, যা শরীরে ভিটামিন এ
তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য এবং সিস্টেমের জন্য ভীষণ
গুরুত্বপূর্ণ। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে টমেটো ভীষণ কার্যকারী একটি সবজি। চোখের
জ্যোতি ফেরাতে সাহায্য করে মাত্র একটি টমেটো।
টমেটোতে থাকা ভিটামিন, খনিজ, আইরন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান
আপনার চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। তাই যারা চোখের সমস্যায়
ভুগছেন তাদের জন্য পরামর্শ হলো, বাড়তি ওষুধ খাওয়ার ঝামেলা না করে নিয়মিত টমেটো
খান। টমেটো আপনার শরীর এবং চোখ ও ভাই ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
ফুসফুস ভালো রাখে
টমেটোতে আছে লাইকোপিন, ক্যারোটিন যা ফুসফুস ভালো রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এর
সঠিক কার্যকারিতার সঙ্গে সংযুক্ত। টমেটোতে থাকা এই
এন্টিঅক্সিডেন্ট যারা ধূমপান করে তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমায়।
নিয়মিত টমেটো খেলে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো থাকে । বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের হাত
থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অবশ্যই
নিয়মিত টমেটো খান। খুব কম দামে হাতের নাগালে টমেটো পাওয়া যায়। তাই টমেটো
খেতে আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হবে না। অল্প টাকায় স্বাস্থ্যসম্মত জিনিস হলো
টমেটো।
ব্যায়ামের পর ক্লান্তি দূর করে
টমেটোর রস পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম এর মত ইলেকট্রোলাইটের একটি চমৎকার উৎস
টমেটো। তীব্র ঘামযুক্ত ওয়ার্কআউটের পরে টমেটোর রস পান করলে বা টমেটো খেলে
শক্তি ফিরে পাবে এবং ক্লান্তি ভাব দূর হবে।
টমেটো ভীষণ শক্তিশালী একটি সবজি এটা আপনি রান্না করা ছাড়াও কাঁচা খেতে পারবেন।
একটা আপেলে যা গুণ আছে তার থেকে বেশি টমেটোতে বেশি পুষ্টিগুণ পাবেন। তবে অবশ্যই
মেডিসিন যুক্ত টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
মাড়ি থেকে রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করে
অনেক সময় আমাদের মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়। এই রক্তপাত সাধারণত ভিটামিন সি এর
অভাবে হয়ে থাকে। টমেটোতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। আপনি যদি মাড়ি থেকে রক্ত
পড়া সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত একটি করে টমেটো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে
তুলুন।
টমেটো আপনার মাড়ি ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করবে পাশাপাশি রক্তপাত হওয়া থেকেও
বাঁচাবে। সকলেই চাই সুস্থ দাঁত, এজন্য অবশ্যই আপনাকে টমেটো খেতে হবে বেশি বেশি।
টমেটো অনেক সস্তায় কিনতে পাওয়া যায়, তাই এটা কিনতে ব্যয়বহুল টাকা খরচ করতে
হবে না। ভিটামিন সি যুক্ত ফলের চাইতে টমেটোর দাম অনেক কম।
জ্বর নিরাময়ের সহায়ক
টমেটো নাপাসিরাপের কাজ করে থাকে। কেননা অনেক সময় বিভিন্ন কারণে গায়ের তাপমাত্রা
বেড়ে যায়। কোন ওষুধ ছাড়াই, একটি টমেটো খেলে এ সামান্য জ্বর সারিয়ে
ফেলতে পারে। শুধু তাই নয় সর্দি কাশি প্রতিরোধ টমেটো বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। সর্দি কাশি হলে একবার দুইটি টমেটো স্লাইস করে অল্প চিনি মিশিয়ে বা লবণ
দিয়ে খেতে পছন্দ করলে লবণ দিয়ে সুপ তৈরি করে খেতে পারেন।
এর ফলে সর্দি-কাশি জ্বর নিমিষেই সেরে যেতে পারে। ওষুধ না খেয়ে এই পদ্ধতিটি
এপ্লাই করে দেখতে পারেন। ভালো ফলাফল পাবেন আশা করা যায়। টমেটো অনেক উপকারী একটি
সবজি যা সকলেই পছন্দ করে থাকে। কাঁচা টমেটো খেতে না পারলে আপনি টমেটোর
সস বানিয়ে খাবেন। বাড়িতে টমেটো সস বানিয়ে খাওয়া বেশি উপকারি।
টমেটো খাওয়ার অপকারিতা
যদিও টমেটো সাধারণত একটি পুষ্টিকর এবং উপকারী সবজি হিসাবে পরিচিত, তবে কিছু
শারীরিক অসুস্থতার টমেটো খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত টমেটো খেলে
বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে চলুন তাহলে জেনে নিই।
অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কারন টমেটোতে আছে
ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট। যা সহজেই শরীর থেকে বের হয় না, এগুলো শরীরের জমা
হতে শুরু করে এবং সহজেই কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেই।
বেশি মাত্রই টমেটো খেলে গেটে বাত হতে পারে। এর কারণ টমেটোতে রয়েছে সোলা নিন
নামক বিশেষ অ্যালকালয়েড, কোষের ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যোগের
পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি করতে শুরু করে।
যারা পেট ব্যথা পেটের পিড়ায় ভোগেন তাদের জন্য অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া
ক্ষতিকর। অবশ্যই এমন রোগীরা অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
টমেটোতে হিস্টামিন নামের এক ধরনের উপাদান রয়েছে। যা ত্বকের এলার্জি সৃষ্টি
করে, অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে মুখ, জিহবা, হাঁচি, গলার জ্বালাপোড়া
ইত্যাদি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও টমেটোতে সালমোনিলা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া
ডায়েরি কারণ হিসাবে ধরা হয়। অতিরিক্ত টমেটো খেলে ব্যাকটেরিয়ার কারণে
ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টমেটোতে আরো রয়েছে লাইকোপেন যা অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে জমা হলে
লাইকোপিনোডারমিয়া নামের এক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শুধু তাই নয় রক্তে
লাইক ওপেন বেড়ে গেলে ত্বকের রং পরিবর্তন শুরু করে।
এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে টমেটো খাওয়ার ফলে আপনার হজমের সমস্যা এবং বমি বমি
ভাব দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই সচেতনতার সাথে খাবার খাবেন। অতিরিক্ত
মাত্রায় খেলে যদি সমস্যা হয় তবে খাবার পরিমাণ কমিয়ে দিন।
টমেটোতে এমন এক যোগ রয়েছে যা নির্দিষ্ট কোন ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া তৈরি
করতে পারে। আপনি যদি জটিল কোন অসুখে ভুগে থাকেন তাহলে, ওষুধ চলাকালীন টমেটো
খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
যদিও টমেটো সাধারণত একটি পুষ্টিকর সবজি হিসাবে পরিচিত
তবুও অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে কিছু শারীরিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যদি সকালে খালি পেটে এক থেকে দুইটি টমেটো খেতে পারেন তাহলে আপনি পাবেন
জাদুকরি উপকারিতা। সকালে খালি পেটে টমেটো খেলে আপনার হজম শক্তি উন্নত করতে
সাহায্য করবে। কেননা এতে রয়েছে ফাইবার, যা অন্ধের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।এছাড়াও টমেটোতে রয়েছে এসিড যা পাকস্থলীতে হজম ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা
করে।
সকালে খালি পেটে টমেটো খেলে আপনার শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে
এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। টমেটোতে উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই এসব বড় বড় রোগ থেকে রক্ষা পেতে চাইলে নিয়মিত
সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। উপকার আপনি নিজেই বুঝতে
পারবেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে টমেটো
আপনি হয়তো ভাবছেন টমেটো খেলে কি ওজন কমে? হ্যাঁ নিশ্চয়ই, টমেটো এমন একটি সবজি
যা আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ওজন কমানোর জন্য যারা স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে
থাকেন তাদের জন্য টমেটো একটি চমৎকার স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান। টমেটোতে রয়েছে
বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন উপাদান। একটি ফল খেলে আপনি যে ভিটামিন পাবেন,
টমেটোতেও ঠিক তেমনি ভিটামিন পাবেন।
টমেটোতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকলেও এটি দীর্ঘ সময় ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণ রাখতে
সাহায্য করে। ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে না যার ফলে আপনাকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করতেও
হয় না। এর মাধ্যমে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করবে এই
জাদুকরি টমেটো। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতেই পারছেন ওজন কমাতেও কিভাবে টমেটো
সাহায্য করে। শরীর ফিট রাখতে আমরা সকলেই পছন্দ করি, আর এজন্য অবশ্যই টমেটো
খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার যে কোন ডায়েটে একটি সুস্বাস্থ্য সংযোজন। গর্ভের
বাচ্চা এবং মা উভয়ের জন্য টমেটো একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। গর্ভাবস্থায় টমেটো
বিভিন্ন ধরনের উপকার পাবেন। তাহলে চলুন কি কি উপকার পাবেন একটু জেনে নিই।
ক্যালোরি ঃ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজনের জন্য মায়েরা ক্লান্ত
বোধ করে। এই ক্লান্ত তা দূর করতে পারে একমাত্র টমেটো। টমেটোর মধ্যে থাকা পর্যাপ্ত
পরিমাণ ক্যালরি উপাদান গর্ভবতী মায়েদের উৎসাহিত করে এবং ক্লান্তি দূর করতে
সাহায্য করে।
ফাইবার ঃ টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজমের জন্য
দারুন উপকারী। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ হজমের সমস্যা দেখা দেয়।
নিয়মিত বাথরুম হয় না, গর্ভাবস্থায় এটি একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যার হাত থেকে
বাঁচতে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত টমেটো খান।
পটাশিয়াম ঃ গর্ভাবস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপ, হাই প্রেসার এর রোগ
গুলো দেখা দেয়।এ সকল রোগের হাত থেকে বাঁচতে টমেটো খান, কেননা টমেটোর প্রচুর
পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে যা আপনার শরীরের সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায় এবং স্টেন
সহজ করে দেয়।
ভিটামিন ঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতীদের প্রচুর পরিমাণ
ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। টমেটোতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, এবং ভিটামিন ই।
আপনার শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করবে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
শেষ কথা ঃ টমেটোর পুষ্টিগুণ ও ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনার নিশ্চয় জানতে পেরেছেন টমেটোর পুষ্টিগুণ ও
১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। এছাড়াও আরো জানতে পেরেছেন, অতিরিক্ত টমেটো
খাওয়ার অপকারিতা সমূহ এবং গর্ভাবস্থায় টমেটো খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়,
ওজন কমাতে টমেটো কতটা সাহায্য করে ইত্যাদি বিষয়ে।
আশা করি আপনি, আপনার অজানা তথ্যগুলি জানতে পেরেছেন। আমার দেওয়া তথ্য গুলি অনুসরণ
করলে অবশ্যই উপকৃত হবেন। এমন আরও তথ্যবহুল পোস্ট পড়ার জন্য নিয়মিত আমার
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
মুন্নি ফিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url